দুই লাখ মোহরানায় ব্যাঙের বিয়ে
ডেস্ক রিপোর্টঃ
![]() |
বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে |
বাড়ির আঙিনায় কলা গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে
গেট। রং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো হয়েছে
পুরো বাড়ি। সঙ্গে বাজানো হচ্ছে
বাদ্যযন্ত্র, বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নাচছে শিশু থেকে বৃদ্ধ, চলছে গানও। এতো
হই-হুল্লোড়ের মধ্যে পৌঁছেছে বরযাত্রী। এর পর শুরু হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। সেই
পুরনো রেওয়াজ মেনে বর-কনে পক্ষের মধ্যে মোহরানা নিয়ে শুরু হয় দর-কাষাকষি। কনে
পক্ষের মোহরারা হাঁকা শুরু ২ কোটি দিয়ে, দর-কাষাকষিতে শেষমেষ নির্ধারণ হয় ২ লাখ।
এতো আয়োজন মূলত ব্যাঙের বিয়ে ঘিরে। আজ রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের
বুড়িশ্বর ইউনিয়নে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। মূলত বৃষ্টির আশায় স্থানীয়রা ব্যাঙের এই
বিয়ের আয়োজন করেছেন।
কনের বাড়িতে ঢুকতেই কলা গাছের গেট। বং-বেরংয়ের কাগজ দিয়ে সাজানো
বাড়িজুড়ে বর (পুরুষ ব্যাঙ) ও কনে (স্ত্রী ব্যাঙ) পক্ষের লোকজন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে
বৃষ্টির গান গাইছেন। সঙ্গে নাচ তো আছেই।
গ্রামবাসীরা মনে করেন, ব্যাঙের বিয়ে দিলে সৃষ্টিকর্তা খুশি হন, তখন বৃষ্টি হয়। সেই
বিশ্বাস থেকেই এ বিয়ের আয়োজন।
স্থানীয় কৃষক মো. মিজান শাহ বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল থেকে এ রীতি চলে
আসছে। আগে এতে কাজ হতো, এখনও আমরা বিশ্বাস রাখি ব্যাঙের বিয়ের পর বৃষ্টি হবে।’
হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেই এ বিয়ের আয়োজন করেছেন।
স্থানীয় শিক্ষক অজিত কুমার পাল বলেন, ‘এটা শুধু একটি রীতি নয়,
আমাদের ঐতিহ্য। চৈত্র মাসে যখন পানির সংকট দেখা দেয়, তখন গ্রামের সবাই মিলে
বৃষ্টির আশায় এই আয়োজন করে। এটি মূলত সম্মিলিত আশার প্রকাশ।’
শুধু কৃষকরাই নন, প্রশাসনের লোকজনও বৃষ্টির প্রত্যাশায় এই ব্যাঙের
বিয়ে দেখতে এসেছেন।
নাসিরনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কাজী রবিউস সারোয়ার
বলেন, ‘আমরা স্থানীয়দের পাশে আছি। দীর্ঘমেয়াদে পানির সংকট কাটাতে উচ্চপর্যায়ে
বিষয়টি জানানো হবে।’
ব্যাঙের বিয়ের এই আয়োজনে সত্যিই কি দেখা মিলবে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির?
এখন সেটাই দেখার বিষয়।