প্রধান উপদেষ্টাকে ফোন করে জাতিসংঘ মহাসচিবের শোক প্রকাশ
সংবাদ ডেস্ক:
সুদানে ড্রোন হামলায় ছয় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীর মৃত্যু ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানাতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূসকে ফোন করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় ফোন করে এ বিষয়ে গভীর শোক ও সমবেদনা জানান তিনি।
ফোনালাপে গুতেরেস বলেন, আমি গভীর গভীর শোক প্রকাশ করতে ফোন করেছি। আমি সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত। তিনি হামলার ঘটনায় গভীর আতঙ্ক ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন এবং প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান, যেন তিনি নিহত শান্তিরক্ষীদের শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর কাছে তার সমবেদনা পৌঁছে দেন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইউনূস বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রাণহানিতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং আহত সেনাদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানান্তর এবং নিহতদের মরদেহ দ্রুত দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা গ্রহণে জাতিসংঘের সহায়তা কামনা করেন।
গুতেরেস জানান, আহত শান্তিরক্ষীদের প্রাথমিকভাবে সুদানের একটি স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতদের উন্নত সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন হাসপাতালে স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে।
আহতদের চিকিৎসা ও সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে নজর দেওয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান প্রফেসর ইউনূস।
এই ফোনালাপে প্রধান উপদেষ্টা মহাসচিবের গত রমজান মাসে বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন। এ সময় দুই নেতা বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়েও আলোচনা করেন। প্রফেসর ইউনূস গুতেরেসকে আশ্বস্ত করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবে।
গতকাল শনিবার স্থানীয় সময় আনুমানিক দুপুর ৩টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে ড্রোন হামলা চালায় দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী। এতে সেখানে দায়িত্বরত ছয়জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী শহীদ হন এবং আটজন শান্তিরক্ষী আহত হন।
হতাহত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের না ও পরিচয় জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।
শহীদ শান্তিরক্ষীরা হলেন, কর্পোরাল মো. মাসুদ রানা, এএসসি (নাটোর), সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম, বীর (কুড়িগ্রাম), সৈনিক শামীম রেজা, বীর (রাজবাড়ি), সৈনিক শান্ত মন্ডল, বীর (কুড়িগ্রাম), মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (কিশোরগঞ্জ), লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া (গাইবান্ধা)।
আহত শান্তিরক্ষীরা হলেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল খোন্দকার খালেকুজ্জামান, পিএসসি, অর্ডন্যান্স (কুষ্টিয়া); সার্জেন্ট মো. মোস্তাকিম হোসেন, বীর (দিনাজপুর); কর্পোরাল আফরোজা পারভিন ইতি, সিগনালস (ঢাকা); ল্যান্স কর্পোরাল মহিবুল ইসলাম, ইএমই (বরগুনা); সৈনিক মো. মেজবাউল কবির, বীর (কুড়িগ্রাম); সৈনিক মোসা. উম্মে হানি আক্তার, ইঞ্জি. (রংপুর); সৈনিক চুমকি আক্তার, অর্ডন্যান্স (মানিকগঞ্জ); সৈনিক মো. মানাজির আহসান, বীর (নোয়াখালী)।
