জরুরী নম্বর সমূহ

জরুরী নম্বর সমূহ

রোহিঙ্গা মুসলিমদের দমনপীড়ন চালাচ্ছে আরাকান আর্মি: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ


সংবাদ ডেস্ক: 
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাখাইনের দখলকৃত এলাকায় রোহিঙ্গাদের চলাফেরায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ, লুটপাট, আটক, মারধর, জোরপূর্বক শ্রম, এমনকি শিশুদের নিয়োগের মতো নৃশংসতা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি।

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এলেইন পিয়ারসন বলেন, “রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী যেভাবে রোহিঙ্গাদের নিপীড়ন করে এসেছে, আরাকান আর্মিও এখন সেই একই পথ অনুসরণ করছে। তাদের এসব আচরণ এখনই বন্ধ করা উচিত।”

২০২৩ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে নতুন করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আরাকান আর্মি। সংঘর্ষের পর তারা উত্তর রাখাইনের বহু এলাকা দখলে নেয়। সে সময় তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, সব জাতিগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। কিন্তু বাস্তবে রোহিঙ্গাদের জীবনে এসেছে আরও দুঃসহ অবস্থা।

রোহিঙ্গারা জানায়, দুই দিক থেকে তারা এখন নিপীড়নের শিকার—একদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী, অন্যদিকে আরাকান আর্মি। উভয় পক্ষই নির্বিচারে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, বেআইনি নিয়োগসহ নানামুখী সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের শেষ দিক থেকে রাখাইন ও চীন রাজ্যে চার লাখের বেশি মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা আবারও বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ, আরাকান আর্মি তাদের জমি, ঘরবাড়ি, গবাদি পশু, এমনকি কবরস্থান দখল করে নিচ্ছে। পুরোনো কবরস্থান ভেঙে দিয়ে ধানক্ষেতে দাফন করতে বাধ্য করা হচ্ছে। কৃষিকাজ ও জীবিকার ওপর আরোপ করা হচ্ছে নানা বিধিনিষেধ, পাশাপাশি চলছে চাঁদাবাজি ও নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। এর ফলে খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পক্ষ থেকে মিয়ানমার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার রক্ষায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং আরাকান আর্মির কর্মকাণ্ডের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

Powered by Blogger.